হিজবুল্লাহর ড্রোন: ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি

ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী ‘নির্ভরযোগ্য’ হিসেবে পরিচিত, কিন্তু সম্প্রতি হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। গত রবিবার, মধ্য-উত্তর ইসরায়েলের একটি সেনাঘাঁটিতে ড্রোন হামলার মাধ্যমে এই সংগঠনটি ইসরায়েলের গভীরতম অঞ্চলে প্রবেশ করে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে। 

হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। হামলা হয়েছে স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে, যা গত বছরের গাজা যুদ্ধের পর অন্যতম সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

হিজবুল্লাহ জানায়, তারা বিন্যামিনা শহরের একটি সেনা প্রশিক্ষণ শিবিরকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায়। শহরটি তেল আবিবের উত্তরে এবং লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে অবস্থিত। হামলার প্রেক্ষিতে হিজবুল্লাহ তাদের প্রতিশোধ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছে যে, তারা সম্প্রতি ইসরায়েলের হামলার বদলা হিসেবে এই হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার আগে বলেছিল যে, তারা লেবানন থেকে একটি ড্রোন শনাক্ত করে তা প্রতিহত করেছে, কিন্তু হামলার সময় সতর্কবার্তার অভাব এবং কিভাবে ড্রোনটি ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি দেখা গেছে, যা হিজবুল্লাহর ড্রোনকে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে।

হিজবুল্লাহ আরও দাবি করেছে যে, তারা নিজেদের ড্রোনগুলোকে শনাক্ত হওয়া এড়াতে সক্ষম হয়েছিল এবং এই ড্রোনগুলো ইসরায়েলের রাডারকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছেছে। আইডিএফের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, এই ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং তারা এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন।

এই হামলা ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন প্রশ্ন তোলে, এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ভবিষ্যতে ড্রোন হামলার হুমকি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url